রাতে হালকা বৃষ্টির পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আকাশ পরিষ্কার। কুয়াশা নেই। শীতও কম। এমন পরিবেশে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ঢল নেমেছে মুসল্লিদের। আজ বৃহস্পতিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লিদের সংখ্যাও বাড়ছে। ধীরে ধীরে ভরে উঠছে ইজতেমার মাঠ।

আগামীকাল শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ইজতেমায় যোগ দিতে গত মঙ্গলবার থেকেই আসতে শুরু করেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসল্লিরা। তবে আজ সকাল থেকে মুসল্লিদের ভিড় দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি। বেশিরভাগ মুসল্লি চলে আসায় আজ সন্ধ্যার পর থেকেই বয়ান শুরুর কথা জানিয়েছেন ইজতেমা আয়োজকেরা।

ইজতেমা আয়োজকদের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি খন্দকার মেজবাহ বলেন, ‘এবার ইজতেমায় আমাদের কয়েক লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটবে। এরই মধ্যে মাঠ ভরে গেছে। প্রায় সব মুসল্লি চলে আসায় আজ সন্ধ্যা থেকেই বয়ান শুরু করে দেব আমরা।’

তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলাদাভাবে। প্রথম পর্বের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। ৪ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এ পর্ব। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা হবে ৯ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি। এ পর্বের নেতৃত্ব দেবেন ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা।

আজ সকাল থেকে ইজতেমা মাঠ ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইজতেমা মাঠে প্রবেশের জন্য আটটি সড়ক ও পাঁচটি ভাসমান সেতু (পন্টুন) রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা ইজতেমায় যোগ দিতে তুরাগতীরে আসছেন। কেউ বাসে, কেউ ট্রাকে, আবার কেউ পিকআপ ভ্যানে চড়ে এসেছেন ইজতেমা মাঠে। সবার হাতেই একাধিক ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ভিন্ন ভিন্ন ফটক দিয়ে মাঠে ঢুকে নিজ নিজ খিত্তায় (নির্ধারিত জায়গা) অবস্থান নিচ্ছেন মুসল্লিরা।

বেলা ১১টার দিকে মাঠে গিয়ে কথা হয় বিভিন্ন এলাকার মুসল্লিদের সঙ্গে। ৩৬ নম্বর খিত্তার মুসল্লি মো. রাকিব হোসেন বলেন, ‘১৯৯৯ সাল থেকে নিয়মিত ইজতেমায় আসি। প্রতিবারের মতো এবারও সব মুসল্লিদের এক সঙ্গে পেয়ে খুব ভালো লাগছে। আগে না আসলে মাঠে জায়গা পাওয়া যায় না। তাই আমরা ২৫ জনের দল দুই দিন আগে (বুধবার) চলে আসছি।’

এবার পুরো ইজতেমা মাঠে শামিয়ানা টানানো হয়নি। ইজতেমার আয়োজকেরা জানান, চটসংকটের কারণে পুরো মাঠে শামিয়ানা টানানো সম্ভব হয়নি। এ কারণে মুসল্লিদের নিজ দায়িত্বে শামিয়ানা আনতে বলা হয়েছে। কিন্তু অনেক মুসল্লি বিষয়টি না জেনে শামিয়ানা ছাড়াই ইজতেমা মাঠে চলে আসেন। এ কারণে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ইজতেমা মাঠের বিদেশি মেহমানখানা–সংলগ্ন বয়ানের মঞ্চের সামনের কয়েক একর জায়গায় শুধু শামিয়ানা টানানো হয়েছে। বাকি জায়গায় বাঁশ পুঁতে রাখা আছে। এর মধ্যে কিছু জায়গায় মুসল্লিরা নিজ উদ্যোগে ত্রিপল, প্লাস্টিকের বস্তা, কাগজ বা কাপড় দিয়ে নিজেদের মতো শামিয়ানা টানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *